Categories
Uncategorized

পটুয়াখালীতে ডিবির অভিযানে ৬ মাদক ব্যবসায়ী আটক

পটুয়াখালী প্রতিনিধি॥
পটুয়াখালীতে মাদক কেনা-বেচাকালে ৬ যুবককে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। রোববার রাতে পটুয়াখালী জেলা শহরে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। পটুয়াখালী গোয়েন্দা পুলিশের ওসি একেএম আজমল হুদা সোমবার দুপুরে এমন তথ্য নিশ্চিৎ করেছেন।

আটককৃতের মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আটককৃতরা সকলে পটুয়াখালী শহরের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সোর্স পরিচয়ে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন।

আটককৃতরা হলেন-পটুয়াখালী জেলা শ্রমিকলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ফারুক ফকিরের ছেলে মো. সোহেল ফকির(২৯) ওরফে ভাব সোহেল,বাউফল উপজেলার কাছিপাড়ার মতিউর রহমানের ছেলে নজরুল ইসলাম(৪০), লাউকাঠির ইউনিয়নের শ্রীরামপুরের মো. আমীর গাজীর ছেলে জসিম গাজী(৩৮), বহালগাছিয়া আমসার তালুকদারের ছেলে মোঃ নুর আলম তালুকদার (২৩) টাউন কালিকাপুরের মোতালেব তালুকদারের ছেলে মোঃ বেল্লাল তালুকদার(২৪)এবং গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি এলাকার জলিল শিকদার ছেলে মোঃ সাইদুল ইসলাম (১৯)।

ঘটনার বরাত দিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের ওসি একেএম আজমল হদা বলেন-রোববার রাতে শহরের হাউজ এলাকায় স্বপ্ন বিলাস বাড়ীর সামনে মাদক সরবরাহকালে মো. সোহেল ফকির, নজরুল ইসলাম, জসিম গাজীকে আটক করে এসআই সম্বিত রায় ও সাইদুল ইসলাম। অভিযানকালে তাদের কাছ থেকে ৩ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।

একই টিম অপর একটি অভিযানে নুর আলম তালুকদার, বেল্লাল তালুকদার ও সাইদুল ইসলামকে আটক করে। এসময় তাদের কাছ থেকে গাঁজা উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মাদকের আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় দেড় লাখ টাকা বলে জানান পুলিশ।

Categories
Uncategorized

কুয়াকাটায় ভ্রাম্যমান আদালতের হয়রানির অভিযোগ এনে খাবার হোটেল মালিকদের ধর্মঘট

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় ভ্রাম্যমান আদালতের হয়রানির অভিযোগ এনে ধর্মঘট করেছে খাবার হোটেল মালিকরা। বুধবার (১৭ আগষ্ট) সকাল থেকে সকল খাবার হোটেল বন্ধ রেখে অনির্দিষ্ট কালের জন্য তারা এ কর্মসূচি পালন শুরু করে। এতে ভোগান্তিতে পরেছে কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরা।

খাবার হোটেল-রেস্তোরা মালিক সমিতির সদস্যরা জানান ,গত দুই বছর করোনায় লকডাউনের কারনে তাদের হোটেল রেস্তোরা বন্ধ ছিলো। তবে হোটেল বন্ধ থাকলেও তাদের কর্মচারীদের বেতন গুনতে হয়। এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয় হোটেল মালিকরা। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারা আগের লোকসান পুষিয়ে উঠতে ধারদেনা করে ফের ব্যবসা শুরু করে। কিন্তু বর্তমান সময় মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমান আদালত হয়রানি করায় তারা অনেকটা নি:স্ব হয়ে পড়েছে।
তাই প্রশাসনের কাছ থেকে ভালো কোন ফলাফল না পাওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের
সকল হোটেল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

মুন্সিগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক মোঃ আবু মিয়া জানান, গতকাল রাতে কুয়াকাটায় এসেছি। খাবার-দাবার না বেশ বিপাকে পরেছি । সকল খাবার হোটেল বন্ধ। অনেক হাটাহাটি করেও কোন হোটেল খোলা পাইনি। পরে মোটরসাইকেলযোগে ৬০ টাকা ভাড়া দিয়ে
আলীপুর খাবার খেয়েছি।

মাদারীপুর থেকে আসা পর্যটক আমিনুল
ইসলাম জানান, পরিবারের সবাইকে নিয়ে কুয়াকাটায় এসেছি। সকল খবার
হোটেল বন্ধ থাকায় বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভ্যানযোগে মহিপুর গিয়ে সকালের নাস্তা করেছি।

বরিশাল থেকে আসা পর্যটক সোহাগ মাহামুদ বলেন, আমরা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ বন্ধ মিলে কুয়াকাটা এসেছি তিনদিন আগে আজকে চলে যাবো। খাবার রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় আমরা সকালের নাস্তা করতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন, মাঝেমধ্যে কুয়াকাটাতে ঘুড়তে আসা হয়। কিন্তু এর আগে যতবার আসছি খাবার রেস্তোরাঁয়, ফটোগ্রাফার, যাত্রীবাহী বাস ও বিচসহ বিভিন্ন জায়গায় হয়রানির শিকার হয়েছি। ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করার ফলে দুই মাসে এই হয়রানি অনেকটা কমে এসেছে ।

খাবার হোটেল-রেস্তোরা মালিক সমিতির সভাপতি মো. সেলিম মিয়া জানান, আমরা এখন অসহায় হয়ে পড়েছি। ধরেন সারা দিনে একজন হোটেল মালিক মাত্র ১০ হাজার টাকা বিক্রি করলো। কিন্তু নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এসে তুচ্ছ কারনে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করলো। এভাবে একের পর এক ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার ফলে আমরা এখন নি:স্ব। হোটেল বন্ধ রাখা ছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই। কারন আমরা জরিমানা গুনতে গুনতে ধারদেনায় জর্জরিত হয়ে পড়েছি। তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন সুরাহা না হলে আমাদের হোটেল অনির্দিষ্ট কারে জন্য বন্ধ থাকবে।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, মূলত কুয়াকাটায় পর্যটকরা এসে যাতে কোনভাবে প্রতারিত না হয়, সে কারনেই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়। আমাদের পক্ষ থেকে তাদের হোটেল খোলার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। তারপর তাদের যদি কোন কথা থাকে, সেটা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের কথা জানিয়েছি।

মঙ্গলবার (১৬ আগষ্ট) দুপুরে কুয়াকাটা পৌর শহরের চৌরাস্তা এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে পঁচা-বাসি খাবার বিক্রি ও সংরক্ষনের দায়ে ৪ রেস্টুরেন্ট মালিককে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রট ছেনমং রাখাইন।

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রট ছেনমং রাখাইন জানান, কুয়াকাটা ঘুরতে এসে কোন পর্যটক যাতে প্রতারিত না হয় সে বিষয়ে আমাদের নজরদারি রয়েছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Categories
Uncategorized

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের মালামাল ফেরত নিল প্রশাসন,২৯ পরিবারের বিলাপ

পটুয়াখালী প্রতিনিধি॥
ভূমি অফিসের লোকজনের হাতে-পায়ে ধরে কান্নাকাটি করেছি, তবুও তারা ঘরের মালামাল ফেরত নিয়ে গেছেন। মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী গরিবদের ঘর উপহার দিছেন। এসব ঘরে অনেকেই পরিবার নিয়ে বাস করছেন, তাহলে আমার কী অপরাধ? ঘর তৈরির মালামাল দিয়ে তারা আবার ফেরত নিচ্ছেন কেন? এ অন্যায়ের বিচার কে করবেন? ঘর তোলার জন্য ৩৫ হাজার টাকা সুদে এনে ডোবা ভরাট করে ভিটা বানাইছি। এখন তো টাকাও গেল, ঘরও গেল! কান্নাজড়িত কণ্ঠে এভাবেই বিলাপ করছিলেন পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের তাসলিমা বেগম।

তাসলিমার মতো আরও ২৯ পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের মালামাল পেয়েও হারিয়েছেন। মুজিব শতবর্ষে তৃতীয় পর্যায়ের প্রথম ধাপে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত ২৯৭ জনের নামের মধ্য ২৯ ব্যক্তির মালামাল ফেরত নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নতুন ঘর তোলার জন্য ইট, বালু খোয়া দেওয়া হলেও সম্প্রতি তা ফেরত নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে পরিবার গুলোর মাঝে আহাজারি চলছে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘরের তালিকায় নাম উঠাতে ধারদেনা করেছি। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ঘরের ভিটা বানাইছি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও ঘর তৈরির করে দেওয়ার পরিবর্তে মালামাল ফেরত নিয়ে যাচ্ছেন ইউএনওর লোকজন।

তৃতীয় পর্যায়ের প্রথম ধাপে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত ৫০ নাম্বার ক্রমিকে মো. তোফাজ্জেল প্যাদা, ৯৪ ক্রমিকে মোসা. মিনারা বেগম, ২২১ ক্রমিকে মোসা. তাসলিমা বেগম, ২৫৭ ক্রমিকে শাহ আলম, ১৮৪ ক্রমিকে মো. রেজাউল এবং ২৪৪ নাম্বার ক্রমিকে মোসা. কমেলা বেগমসহ ২৯ জনের মালামাল ফেরত নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীরা আরও বলেন, ইতোপূর্বে রাঙ্গাবালী উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর ঘর দেওয়া হয়েছে। ওইসব ঘরের সিংহভাগ জমিতে নীতিমালা মানা হয়নি। তাহলে শেষ পর্যায়ে নীতিমালার অজুহাতে আমাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা কেন টালবাহানা করছেন?

শাহ আলম প্যাদা বলেন, ডিসি, ইউএনও এবং মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ আছে বলেই রানাসহ কয়েক যুবক ঘরের মালামাল জোর করে নিয়ে গেছেন। এরপর থেকে আমি অসুস্থ। অন্যদের ঘর উঠছে। কী কারণে আমাদের ঘরের মালামাল নিয়ে গেছে, জানি না। এ বিষয়ে উপজেলা ভূমি অফিসের তহশিলদার মনিরুল ইসলাম বলেন, আমি শুধু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার হুকুম পালন করেছি।

রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাশফাকুর রহমান বলেন, সম্ভবত জমি নির্ধারণ সংক্রান্ত বিষয়ে ডিসির কাছে অভিযোগ ছিল, তাই জেলা প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি বলেন,এবার এককভাবে নয়, গুচ্ছ আকারে ঘর দেওয়া হবে। আগের গুলোতে অসঙ্গতি ছিল। এককভাবে ঘর দিলে জমি নষ্ট হয়, খাস এবং ব্যক্তি জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। এবার উঁচু স্থানে আশ্রয়ণ আকারে হবে। তাছাড়া ‘খ’ শ্রেণিতে ঘর দিতে গেলে আগে ‘ক’ শ্রেণি সম্পূর্ণ শূন্য ঘোষণা করতে হবে। আরও ৪৮ জন বাকি আছে, তাদের দিয়ে শূন্য ঘোষণা করা হবে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, ঘর নির্মাণে জমি পছন্দে আগে ত্রুটি ছিল। আগে বাড়িতে বাড়িতে এককভাবে হয়েছে। এবার গুচ্ছ আকারে হবে। সরেজমিনে যাচাই করে এর অসঙ্গতি পাওয়া গেছে। তাছাড়া ঘর বরাদ্দে যে নীতিমালা রয়েছে, তার আওতায় এগুলো পড়েনি, তাই মালামাল ফেরত নেওয়া হচ্ছে।