Categories
সারাদেশ

কুয়াকাটা ক্লাবের বিরুদ্ধে জমি দখল করে স্থাপণা নির্মাণের অভিযোগ

গোফরান পলাশ, কলাপাড়া:
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আদেশ অমান্য করে ভূমি দস্যুতায় লিপ্ত হয়েছে কুয়াকাটা ক্লাব। অন্যের জমি দখল করে পাকা স্থাপণা নির্মাণ করা হচ্ছে। কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করা হয়।

লিখিত সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কুয়াকাটা ক্লাব কর্তৃপক্ষ কাগজপত্র পর্যালোচনা ছাড়াই ৪ একর ১৭ শতক জমি বারবার মামলায় হেরে যাওয়া একটি পক্ষের নিকট থেকে বায়না চুক্তি করে পাকা স্থাপণা নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। কুয়াকাটায় জমি ক্রয়-বিক্রয়ে অনুমোদন নেয়ার নিয়ম থাকায় মামলার তথ্য গোপন করে জেলা প্রশাসন ও বিভাগীয় কমিশনারের অনুমোদনও পেয়েছেন তারা। এখন যেকোন মুহূর্তে দলিল রেজিস্ট্রি করে নিবেন, এমন শঙ্কার কথাও উল্লেখ করেছেন জমির মালিকানা দাবিদারদের একজন গাজী আব্বাস উদ্দিন আহম্মেদ (বাচ্চু)।
তিনি সংবাদ সম্মেলনের লিখিত অভিযোগে বলেন, কুয়াকাটা ক্লাব’র মত একটি সামাজিক সংগঠন এমন অস্বচ্ছতার আশ্রয় নিয়ে দখল নৈরাজ্য করলে তা আইনগতভাবে মোকাবেলা করা হবে।

কুয়াকাটা ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ওয়াহিদুজ্জামান সোহেল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যথাযথভাবে পর্যালোচনা করেই প্রকৃত জমির মালিকদের নিকট থেকে রেজিস্ট্রি বায়না চুক্তি সম্পাদন করে আমরা ভোগদখলে রয়েছি।

অন্যদিকে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়েছে, পর্যটন নগরী কুয়াকাটা পৌর সভার ৮ নং ওয়ার্ডে এস এ ২০৮ নং খতিয়ানের মালিক রাখাইন সম্প্রদায় ইয়োছেনা মগনী ও লাথয়ে মগ হইতে ১৩ একর ৫৪ শতক জমির পত্তন মুলে মালিক ছিলেন মরহুম আঃ করিম হাওলাদার। তার মালিকানা স্বত্ব বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক দেওয়ানী ১২৩/৭৫ নং মোকাদ্দমায় রায় ডিগ্রি বলে স্বীকৃত। উক্ত জমি বে-আইনীভাবে পেশী শক্তির জোরে স্থানীয় মোঃ আইউব আলী সিকদার এবং আঃ মন্নান হাওলাদার গংরা জমির প্রকৃত মালিক আঃ করিম হাওলাদারের মুত্যুতে ডিক্রি বাতিলের অপচেস্টায় দেওয়ানী ৮৬/১৯৭৬ এবং ২৯৮/১৯৭৮ নং মোকাদ্দমা করে ব্যর্থ হন।

পরবর্তীতে দেওয়ানী ১১/২০০৩ মোকাদ্দমা করে মোঃ আইউব আলী সিকদার আপিল করেন। যা দ্বিপাক্ষিকভাবে আঃ করিম হাওলাদারের অনুকূলে মোঃ আইউব আলী সিকদার গংদের আপিল খারিজ হয়। উক্ত জমি আঃ করিম হাওলাদারের ওয়ারিশগনের নামে নামজারী ও খাজনা দাখিলা সম্পন্ন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে গাজী আব্বাস উদ্দিন দাবী করেন, নগদ টাকার প্রয়োজনে মরহুম করিম হাওলাদারের ওয়ারিশগন কলাপাড়া এস আর অফিসের ২৬/০৫/২০১১ তারিখের রেজিস্টিকৃত ৪৩৫২ ও ৪৩৫৩ এবং ৭/৬/২০১১ তারিখে রেজিস্টিকৃত ৪৫৫৩/১১ নং বায়না দলিল মুলে ৮ একর ৬৪ শতক জমি বায়নাসহ আমাদের কতিপয় ব্যক্তির নামে হস্তান্তর করেন। এবং ২৬/৫/১১ ইং তারিখে কলাপাড়া এসআর অফিসে রেজিস্টিকৃত ১৩৪৮ ও ১৩৫০ নং আমমোক্তারনামা দলিলমূলে তফসিলভূক্ত সম্পত্তি রক্ষনা বেক্ষণ, মামলা পরিচানা এবং ক্রয় বিক্রয়ের জন্য মোঃ আবুল কালাম ও আমি গাজী মোঃ আব্বাস উদ্দিনকে ওয়ারিশগন কর্তৃক আমমোক্তার নিযুক্ত করেন।

তিনি লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, আইউব আলী সিকদার ও আঃ মান্নান হাওলাদার গংরা নিন্ম আদালত ও উচ্চ আদালতে মালিকানা দাবী স্বত্ব না করতে পেরে কুয়াকাটা ক্লাবের কাছে বিক্রি করে। এবং কলেজ নির্মাণের জন্য জমি মৌখিকভাবে দান করে। উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সেখানে গোপনে জমির আকার আকৃতি পরিবর্তন করেছে। যা সম্পুর্ন বে-আইনী। তিনি আরও দাবী করেন জরিপকারী কর্মকর্তাগন কাগজপত্র পর্যালোচনা না করে বিশেষ সুবিধা গ্রহনের মাধ্যমে আইউব আলী গংদের নামে বিএস জরিপ করে দেয়।

মালিকানা স্বত্ব না থাকলেও শুধুমাত্র ভূলবশত বিএস জরিপের বলে বিরোধীয় জমি তরিঘড়ি করে বিক্রি এবং দানপত্র দলিল করে দিয়ে নিজের দাতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। উচ্চ আদালতের রায় ডিগ্রি বলে বর্তমানে বিএস জরিপ সংশোধনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে দাবী করেন, আইউব আলী সিকদার ও আঃ মান্নান গংরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় পেশি শক্তির বলে জোরপুর্বক দখল করে ভোগদখল করছে। এসব ভূমি দস্যুদের কাছ থেকে দখলমুক্ত করে প্রকৃত মালিকদের মালিকানা স্বত্বে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।