Categories
সারাদেশ

পটুয়াখালীতে চাকুরিচ্যুত নাজিরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

পটুয়াখালী প্রতিনিধি॥
কোষাগারে জমার নামে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অব্যাহতি পাওয়া রাঙ্গাবালী ভূমি অফিসের নাজিরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোববার দুদকের সমন্বিত পটুয়াখালী জেলা কার্যালয়ের সাবেক সহকারী পরিচালক মো. আরিফ হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। অভিযুক্ত মো. রফিকুল ইসলাম পটুয়াখালী সদর উপজেলার ডিবুয়াপুরের মৃত তোজাম্বর আলী হাওলাদারের ছেলে। একই ঘটনায় গত ২৯ জুন মো. রফিকুল ইসলামকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় জেলা প্রশাসন।

দুদক মামলায় বলেন-কলাপাড়ায় চাকরিরত অবস্থায় আদালতের একটি মামলায় বরখাস্ত হয় মো. রফিকুল ইসলাম। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ৪ এপ্রিল বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে বদলি করে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন। তবে কি কারণে রফিকুল ইসলাম‘র বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছিল সে তথ্যও পাওয়া যায়নি। বরখাস্ত থাকাকালীন বাউফল উপজেলা ভূমি অফিসে জনবল সংকট থাকায় সংশ্লিষ্টরা রফিকুল ইসলামকে মৌখিকভাবে নাজিরের দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেন।

মৌখিক নির্দেশে নাজিরের দায়িত্ব পালন কালে ৫০টি ডি.সি.আর এর অনুকুলে আদায়কৃত অর্থ চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে ভুয়া চালান দেখিয়ে ৪০ লাখ ৯২ হাজার ১০৬ টাকা আত্মসাৎ করেন রফিকুল ইসলাম। তবে জেলা প্রশাসনের তদন্ত ও দুদকের মালায় আত্মসাৎকৃত অর্থের গড়মিল রয়েছে। এঘটনায় জেলা প্রশাসনের কয়েকদফা তদন্তে অভিযোগ প্রমানিত হলে গত ২৯ জুন রফিকুল ইসলামকে চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন।

Categories
সারাদেশ

কলাপাড়া প্রেসক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার মোঃ তৌহিদুর রহমান সিআইপি মিলনায়তন উদ্বোধন

গোফরান পলাশ(কলাপাড়া)
পটুয়াখালীর কলাপাড়া প্রেসক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার মো: তৌহিদুর রহমান (সিআইপি) মিলনায়তনের উদ্বোধন করা হয়েছে। দেশ বরেণ্য শিল্পপতি, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, দানবীর ইঞ্জিনিয়ার মোঃ তৌহিদুর রহমান (সিআইপি) আজ বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) অপরাহ্নে প্রধান অতিথি হিসেবে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ফিতা কেটে আধুনিক ডিজিটাল সুবিধা সম্পন্ন নান্দনিক এ হলরুমের শুভ উদ্বোধন করেন।

কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ও পটুয়াখালী ৪ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মোঃ মহিবুর রহমান।

অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ফ্রেশ গ্রুপ অফ কোম্পানিজ’র পরিচালক মোঃ মশিউর রহমান চমক (সিআইপি), ইকোনোমিক্স রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি সুলতান মাহমুদ, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এস এম রাকিবুল আহসান, কলাপাড়া পৌরসভার মেয়র বিপুলচন্দ্র হাওলাদার, কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র মোঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, কলাপাড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আবুল কালাম আজাদ প্রমূখ।

প্রেসক্লাবের সম্পাদক এস এম মোশারফ হোসেন মিন্টুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রশাসক ডা. চিন্ময় হাওলাদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব তালুকদার, কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী হুমায়ূন শিকদার, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি অধ্যক্ষ সৈয়দ নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি কলাপাড়া শাখার সম্পাদক কমরেড নাসির তালুকদার, কলাপাড়া চৌকি আদালত আইনজীবী কল্যাণ সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট শামীম আল সাইফুল সোহাগ, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মো. সাইদুর রহমান, কলাপাড়া বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মো. ফিরোজ শিকদার প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে উত্তরীয় ও বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এবং ক্লাবের সদস্যদের সাথে নৈশভোজে অংশগ্রহণ করেন অতিথিবৃন্দ। এরপর কেক কেটে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি করা হয়।

Categories
সারাদেশ

বঙ্গোপসাগরে ১৪ জেলে সহ দুটি মাছধরা ট্রলার ডুবি

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কবলে পরে ১৪ জন জেলেসহ এফবি সোহেল ও এফবি সুজন নামের দুটি মাছধরা ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আলীপুর-কুয়াকাটা মৎস্য আড়ৎ মালিক সমিতির সভাপতি আনসার উদ্দিন মোল্লা।

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার দিকে বঙ্গোপসাগরের মৌডুবির বয়া সংলগ্ন এলাকার সাগরে দুর্ঘটনা ঘটে। এসময় পাশ্ববর্তী অন্য একটি ট্রলার সকল জেলেদের জীবিত উদ্ধার করেন। উদ্ধারকৃত জেলে, ট্রলার মালিক মোঃ সোহল ও মোঃ সুজনের বাড়ি জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার মৌডুবী ইউনিয়নের নীচকাটা গ্রামে। জেলেরা বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে রয়েছেন এতে তাদের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

আলীপুর-কুয়াকাটা মৎস্য আড়ৎ মালিক সমিতির সভাপতি আনসার উদ্দিন মোল্লা বলেন, হঠাৎ ঝড়ের কবলে পরে ট্রলার দুটি ডুবে যায়। ওই ট্রলার দুটিতে ১৪ জন জেলে ছিলো। তাদেরকে অন্য জেলেরা উদ্ধার করেছেন তারা সুস্থ আছেন। ডুবে যাওয়া ওই ট্রলার মালিকদের প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ইতিমধ্যে অন্য জেলেরা ট্রলার দুটি উদ্ধার কাজ শুরু করেছে।
#

Categories
Uncategorized

কুয়াকাটায় ভ্রাম্যমান আদালতের হয়রানির অভিযোগ এনে খাবার হোটেল মালিকদের ধর্মঘট

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় ভ্রাম্যমান আদালতের হয়রানির অভিযোগ এনে ধর্মঘট করেছে খাবার হোটেল মালিকরা। বুধবার (১৭ আগষ্ট) সকাল থেকে সকল খাবার হোটেল বন্ধ রেখে অনির্দিষ্ট কালের জন্য তারা এ কর্মসূচি পালন শুরু করে। এতে ভোগান্তিতে পরেছে কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরা।

খাবার হোটেল-রেস্তোরা মালিক সমিতির সদস্যরা জানান ,গত দুই বছর করোনায় লকডাউনের কারনে তাদের হোটেল রেস্তোরা বন্ধ ছিলো। তবে হোটেল বন্ধ থাকলেও তাদের কর্মচারীদের বেতন গুনতে হয়। এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয় হোটেল মালিকরা। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারা আগের লোকসান পুষিয়ে উঠতে ধারদেনা করে ফের ব্যবসা শুরু করে। কিন্তু বর্তমান সময় মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমান আদালত হয়রানি করায় তারা অনেকটা নি:স্ব হয়ে পড়েছে।
তাই প্রশাসনের কাছ থেকে ভালো কোন ফলাফল না পাওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের
সকল হোটেল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

মুন্সিগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক মোঃ আবু মিয়া জানান, গতকাল রাতে কুয়াকাটায় এসেছি। খাবার-দাবার না বেশ বিপাকে পরেছি । সকল খাবার হোটেল বন্ধ। অনেক হাটাহাটি করেও কোন হোটেল খোলা পাইনি। পরে মোটরসাইকেলযোগে ৬০ টাকা ভাড়া দিয়ে
আলীপুর খাবার খেয়েছি।

মাদারীপুর থেকে আসা পর্যটক আমিনুল
ইসলাম জানান, পরিবারের সবাইকে নিয়ে কুয়াকাটায় এসেছি। সকল খবার
হোটেল বন্ধ থাকায় বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভ্যানযোগে মহিপুর গিয়ে সকালের নাস্তা করেছি।

বরিশাল থেকে আসা পর্যটক সোহাগ মাহামুদ বলেন, আমরা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ বন্ধ মিলে কুয়াকাটা এসেছি তিনদিন আগে আজকে চলে যাবো। খাবার রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় আমরা সকালের নাস্তা করতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন, মাঝেমধ্যে কুয়াকাটাতে ঘুড়তে আসা হয়। কিন্তু এর আগে যতবার আসছি খাবার রেস্তোরাঁয়, ফটোগ্রাফার, যাত্রীবাহী বাস ও বিচসহ বিভিন্ন জায়গায় হয়রানির শিকার হয়েছি। ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করার ফলে দুই মাসে এই হয়রানি অনেকটা কমে এসেছে ।

খাবার হোটেল-রেস্তোরা মালিক সমিতির সভাপতি মো. সেলিম মিয়া জানান, আমরা এখন অসহায় হয়ে পড়েছি। ধরেন সারা দিনে একজন হোটেল মালিক মাত্র ১০ হাজার টাকা বিক্রি করলো। কিন্তু নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এসে তুচ্ছ কারনে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করলো। এভাবে একের পর এক ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার ফলে আমরা এখন নি:স্ব। হোটেল বন্ধ রাখা ছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই। কারন আমরা জরিমানা গুনতে গুনতে ধারদেনায় জর্জরিত হয়ে পড়েছি। তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন সুরাহা না হলে আমাদের হোটেল অনির্দিষ্ট কারে জন্য বন্ধ থাকবে।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, মূলত কুয়াকাটায় পর্যটকরা এসে যাতে কোনভাবে প্রতারিত না হয়, সে কারনেই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়। আমাদের পক্ষ থেকে তাদের হোটেল খোলার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। তারপর তাদের যদি কোন কথা থাকে, সেটা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের কথা জানিয়েছি।

মঙ্গলবার (১৬ আগষ্ট) দুপুরে কুয়াকাটা পৌর শহরের চৌরাস্তা এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে পঁচা-বাসি খাবার বিক্রি ও সংরক্ষনের দায়ে ৪ রেস্টুরেন্ট মালিককে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রট ছেনমং রাখাইন।

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রট ছেনমং রাখাইন জানান, কুয়াকাটা ঘুরতে এসে কোন পর্যটক যাতে প্রতারিত না হয় সে বিষয়ে আমাদের নজরদারি রয়েছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Categories
Uncategorized

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের মালামাল ফেরত নিল প্রশাসন,২৯ পরিবারের বিলাপ

পটুয়াখালী প্রতিনিধি॥
ভূমি অফিসের লোকজনের হাতে-পায়ে ধরে কান্নাকাটি করেছি, তবুও তারা ঘরের মালামাল ফেরত নিয়ে গেছেন। মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী গরিবদের ঘর উপহার দিছেন। এসব ঘরে অনেকেই পরিবার নিয়ে বাস করছেন, তাহলে আমার কী অপরাধ? ঘর তৈরির মালামাল দিয়ে তারা আবার ফেরত নিচ্ছেন কেন? এ অন্যায়ের বিচার কে করবেন? ঘর তোলার জন্য ৩৫ হাজার টাকা সুদে এনে ডোবা ভরাট করে ভিটা বানাইছি। এখন তো টাকাও গেল, ঘরও গেল! কান্নাজড়িত কণ্ঠে এভাবেই বিলাপ করছিলেন পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের তাসলিমা বেগম।

তাসলিমার মতো আরও ২৯ পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের মালামাল পেয়েও হারিয়েছেন। মুজিব শতবর্ষে তৃতীয় পর্যায়ের প্রথম ধাপে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত ২৯৭ জনের নামের মধ্য ২৯ ব্যক্তির মালামাল ফেরত নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নতুন ঘর তোলার জন্য ইট, বালু খোয়া দেওয়া হলেও সম্প্রতি তা ফেরত নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে পরিবার গুলোর মাঝে আহাজারি চলছে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘরের তালিকায় নাম উঠাতে ধারদেনা করেছি। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ঘরের ভিটা বানাইছি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও ঘর তৈরির করে দেওয়ার পরিবর্তে মালামাল ফেরত নিয়ে যাচ্ছেন ইউএনওর লোকজন।

তৃতীয় পর্যায়ের প্রথম ধাপে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত ৫০ নাম্বার ক্রমিকে মো. তোফাজ্জেল প্যাদা, ৯৪ ক্রমিকে মোসা. মিনারা বেগম, ২২১ ক্রমিকে মোসা. তাসলিমা বেগম, ২৫৭ ক্রমিকে শাহ আলম, ১৮৪ ক্রমিকে মো. রেজাউল এবং ২৪৪ নাম্বার ক্রমিকে মোসা. কমেলা বেগমসহ ২৯ জনের মালামাল ফেরত নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীরা আরও বলেন, ইতোপূর্বে রাঙ্গাবালী উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর ঘর দেওয়া হয়েছে। ওইসব ঘরের সিংহভাগ জমিতে নীতিমালা মানা হয়নি। তাহলে শেষ পর্যায়ে নীতিমালার অজুহাতে আমাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা কেন টালবাহানা করছেন?

শাহ আলম প্যাদা বলেন, ডিসি, ইউএনও এবং মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ আছে বলেই রানাসহ কয়েক যুবক ঘরের মালামাল জোর করে নিয়ে গেছেন। এরপর থেকে আমি অসুস্থ। অন্যদের ঘর উঠছে। কী কারণে আমাদের ঘরের মালামাল নিয়ে গেছে, জানি না। এ বিষয়ে উপজেলা ভূমি অফিসের তহশিলদার মনিরুল ইসলাম বলেন, আমি শুধু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার হুকুম পালন করেছি।

রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাশফাকুর রহমান বলেন, সম্ভবত জমি নির্ধারণ সংক্রান্ত বিষয়ে ডিসির কাছে অভিযোগ ছিল, তাই জেলা প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি বলেন,এবার এককভাবে নয়, গুচ্ছ আকারে ঘর দেওয়া হবে। আগের গুলোতে অসঙ্গতি ছিল। এককভাবে ঘর দিলে জমি নষ্ট হয়, খাস এবং ব্যক্তি জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। এবার উঁচু স্থানে আশ্রয়ণ আকারে হবে। তাছাড়া ‘খ’ শ্রেণিতে ঘর দিতে গেলে আগে ‘ক’ শ্রেণি সম্পূর্ণ শূন্য ঘোষণা করতে হবে। আরও ৪৮ জন বাকি আছে, তাদের দিয়ে শূন্য ঘোষণা করা হবে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, ঘর নির্মাণে জমি পছন্দে আগে ত্রুটি ছিল। আগে বাড়িতে বাড়িতে এককভাবে হয়েছে। এবার গুচ্ছ আকারে হবে। সরেজমিনে যাচাই করে এর অসঙ্গতি পাওয়া গেছে। তাছাড়া ঘর বরাদ্দে যে নীতিমালা রয়েছে, তার আওতায় এগুলো পড়েনি, তাই মালামাল ফেরত নেওয়া হচ্ছে।

Categories
রাজনীতি সারাদেশ

সিরিজ বোমা হামলায় জড়িতদের বিচারের দাবীতে পটুয়াখালীতে বিক্ষোভ সমাবেশ

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে পটুয়াখালীতে বিক্ষোভ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। পটুয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মসূচীতে যুবলীগ.ছাত্রলীগ,স্বেচ্ছাসেবকলীগ,শ্রমিকলীগসহ আওয়ামীর সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। বুধবার বেলা ১১টায় জেলা শহরের পৌর নিউ মার্কেট চত্বর থেকে বিশাল আকারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন শেষে লঞ্চঘাট চত্বরে সমাবেশ মিলিত হয়।

সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে পটুয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলমগীর ও সাধারন সম্পাদক ভিপি আবদুল মান্নান বলেন-২০০৫ সালের ১৭ আগষ্ট দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা হামলা চালায় নিষিদ্ধ জঙ্গি ও জেএমবি সংগঠন। এঘটনায় দুই জন নিহত ও ১০৪ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এঘটনায় দায়েরকৃত ১৫৯টি মামলার প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছে তদন্তকর্মকর্তা। কিন্তু ঘটনার ১৭ বছর পূর্ণ হলেও অপরাধীদের বিচার নিশ্চিৎ করতে পারেনি সরকার।

কর্মসূচীতে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত বিচারের দাবি জানানো হয়। এতে প্রশাসন ব্যর্থ হলে আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে লাগামহীন কঠোর কর্মসূচির ঘোষনা দেয় তারা। অনান্যদের মধ্য বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি অ্যাড.সুলতান আহম্মেদ মৃধা, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট উজ্জ্বল বোস, কোষাধ্যক্ষ গাজী হাফিজুর রহমান সবির, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল ইসলাম খায়ের প্রমূখ।

Categories
জাতীয় সারাদেশ

ভূমি ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে:ভুমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন-প্রচলিত ভূমি জরিপে এক থেকে দেড় যুগ সময় লাগে সেখানে সল্প সময়ে বাংলাদেশ ডিজিটাল জরিপ সম্ভব হবে। এই জরিপ শুরুর সাথে সাথে খসড়া ম্যাপ তৈরি করে ওয়েবসাইটে দেয়া হবে,যাতে জমির মালিক পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে তার জমির ম্যাপ দেখে জমির পরিমানে অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হলে তাৎক্ষনিক আপত্তি দাখিল করতে পারেন। ডিজিটাল জরিপে যাবতীয় তথ্য ডিজিটাল ও নির্ভুল হওয়ায়,জরিপে স্বচ্ছতা আসবে, মামলা মোকদ্দমা কমে আসবে, সাথে জনগণের ভোগান্তিও কমে আসবে। বক্তব্য প্রদানের পূর্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবার এবং ১৫ আগষ্টে সকল শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান মন্ত্রী।

বুধবার(০৩ আগষ্ট)পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন মাঠে বাংলাদেশ ডিজিটাল জরিপ (বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে-বিডিএস)-এর পাইলটিং-এর উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ভূমিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সর্বাধুনিক ফোর্থ জেনারেশন সার্ভে ড্রোনের মাধ্যমে ডিজিটাল জরিপের পাইলটিং পটুয়াখালী শুরু করা হয়েছে। পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলায় এসএ জরিপের পর আরএস জরিপ সম্পন্ন না হওয়ায় উক্ত দুটি জেলার ১৪ টি উপজেলা বিডিএস এর জন্য বাছাই করা হয়েছে। পটুয়াখালীর সদর উপজেলার ইটবাড়িয়া ইউনিয়ন থেকে শুরু হবে এই জরিপ।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারী সাংসদ কাজী কানিজ সুলতানা হেলেন, বরিশাল বিভাগীয় সহকারী কমিশনার মোঃ ওয়াহেদুর রহমান, বিডিএস কার্যক্রমের প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল মান্নান, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন এবং পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ্, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলমগীর ও সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ভিপি আবদুল মান্না, প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী সামসুর রহমান ইকবাল, সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদ প্রিন্স। এছাড়াও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো মোস্তাফিজুর রহমান।

মন্ত্রী আরও বলেন-আমাদের অন্য একটি প্রকল্পের মাধ্যমে স্যাটেলাইট ইমেজ কিনে সেটা মৌজা ম্যাপের সাথে সমন্বয় করে ডিজিটাল ল্যান্ড জোনিং ম্যাপ তৈরি করা হচ্ছে। এর ফলে কৃষিজমি, জলাভূমি, পাহাড় ও বনভূমি রক্ষাসহ জমির পরিকল্পিত ব্যবহার করাও সম্ভব হবে। এনআইডি ইন্টিগ্রেশন থাকায় এখানে জমির মালিকানা,শ্রেণী ও ধরন ইত্যাদি বিষয়ে ডিজিটাল তথ্যভাণ্ডার গড়ে উঠবে। যা দিয়ে জেলা-উপজেলা, বিভাগ ও জাতীয় তথ্যভাণ্ডার গড়ে উঠবে। ফলে ভূমি ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে। বিডিএস একবার ঠিকভাবে করা সম্ভব হলে পুনরায় মাঠ জরিপ করার প্রয়োজন হবে না কারণ জমি হস্তান্তর হলে এসিল্যান্ড প্রয়োজনীয় ডাটা ইনপুট দিয়ে নিজেই ম্যাপ পার্টিশন করে নিতে পারবেন। ম্যাপে সুনির্দিষ্ট দাগে ক্লিক করে ঐ দাগের জমির মালিকানা, জমির পরিমাণ, চৌহদ্দি ও শ্রেণীসহ অন্যান্য তথ্য পাওয়া যাবে।
মন্ত্রী আরও বলেন-বিডিএস পাইলটিং-এর ম্যাপ তৈরি করার জন্য এবার পরীক্ষা মূলক ভাবে এবার প্রথমবারের মত ডিজিটাল ভূমি জরিপ কাজে সক্ষম বেসরকারি প্রতিষ্ঠাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে ভূমিমন্ত্রী বলেন-তবে জরিপের খতিয়ান প্রস্তুত এবং মালিকানা নির্ণয়ের কাজ সরকারি ভাবেই করা হবে। এই পাইলটিং এর অভিজ্ঞতা নিয়ে পরবর্তীতে দেশের বাকী জেলায় একযোগে শুরু করার পরিকল্পনা করা বিডিএস-এর শুভ উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রী করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন ভূমিমন্ত্রী।

অপরদিকে অনুষ্ঠান শুরুর পূর্বে ডিসি দরবার হলে ভূমি সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ বলেন-বিডিএস ম্যাপে জমির পরিমাণ,জমির আইলের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, আকার ইত্যাদি সম্পর্কে জানা যাবে। এই জরিপে তৈরি ম্যাপটিতে সেন্টিমিটার পর্যায় পর্যন্ত এই ভূমি পরিমাপের নির্ভুলতা থাকবে। ডিজিটাল জরিপ বিষয়ে ১৯৫৫ সনের প্রজাস্বত্ব বিধিমালা ৩০ বিধিতে আপত্তি ও ৩১ বিধিতে অনলাইনে আপীল আবেদন ও শুনানি নিষ্পত্তি করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার জমি, খাস জমি, রাস্তাঘাট, জলাধার, নদী খাল ইত্যাদি চিহ্নিত করা হবে, ফলে জমি দলিল ও নামজারি করার সময় জালিয়াতি করে সরকারি জমি আত্মসাৎ বন্ধ করা সম্ভব হবে। এছাড়া অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে দাগভিত্তিক প্রয়োজনীয় জমির পরিমাণ জেনে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ ও প্রদান ও জালিয়াতি প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে এই জরিপ শেষ হলে।

প্রসঙ্গত,সারাদেশে ডিজিটাল জরিপকরণের সক্ষমতা অর্জনের জন্য সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ভূমি মন্ত্রণালয় ১২১২.৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ‘ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ করার জন্য ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ডিজিটাল জরিপ পরিচালনার সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প’ নামে ৫ বছর মেয়াদি প্রকল্পের মাধ্যমে এই জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। অপেক্ষাকৃত স্বল্প সময়ে, নির্ভুলভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ করার জন্য বাংলাদেশ ভূমি জরিপ তথা বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভেতে স্যাটেলাইট, ড্রোন তথা ইউএভি এবং গ্রাউন্ড কন্ট্রোল স্টেশনের সমন্বয়ে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।