Categories
Uncategorized

পটুয়াখালীতে ডিবির অভিযানে ৬ মাদক ব্যবসায়ী আটক

পটুয়াখালী প্রতিনিধি॥
পটুয়াখালীতে মাদক কেনা-বেচাকালে ৬ যুবককে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। রোববার রাতে পটুয়াখালী জেলা শহরে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। পটুয়াখালী গোয়েন্দা পুলিশের ওসি একেএম আজমল হুদা সোমবার দুপুরে এমন তথ্য নিশ্চিৎ করেছেন।

আটককৃতের মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আটককৃতরা সকলে পটুয়াখালী শহরের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সোর্স পরিচয়ে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন।

আটককৃতরা হলেন-পটুয়াখালী জেলা শ্রমিকলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ফারুক ফকিরের ছেলে মো. সোহেল ফকির(২৯) ওরফে ভাব সোহেল,বাউফল উপজেলার কাছিপাড়ার মতিউর রহমানের ছেলে নজরুল ইসলাম(৪০), লাউকাঠির ইউনিয়নের শ্রীরামপুরের মো. আমীর গাজীর ছেলে জসিম গাজী(৩৮), বহালগাছিয়া আমসার তালুকদারের ছেলে মোঃ নুর আলম তালুকদার (২৩) টাউন কালিকাপুরের মোতালেব তালুকদারের ছেলে মোঃ বেল্লাল তালুকদার(২৪)এবং গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি এলাকার জলিল শিকদার ছেলে মোঃ সাইদুল ইসলাম (১৯)।

ঘটনার বরাত দিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের ওসি একেএম আজমল হদা বলেন-রোববার রাতে শহরের হাউজ এলাকায় স্বপ্ন বিলাস বাড়ীর সামনে মাদক সরবরাহকালে মো. সোহেল ফকির, নজরুল ইসলাম, জসিম গাজীকে আটক করে এসআই সম্বিত রায় ও সাইদুল ইসলাম। অভিযানকালে তাদের কাছ থেকে ৩ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।

একই টিম অপর একটি অভিযানে নুর আলম তালুকদার, বেল্লাল তালুকদার ও সাইদুল ইসলামকে আটক করে। এসময় তাদের কাছ থেকে গাঁজা উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মাদকের আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় দেড় লাখ টাকা বলে জানান পুলিশ।

Categories
সারাদেশ

জেলা পরিষদ নির্বাচনে কাজী আলমগীরের মনোনয়ন দাখিল

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে জেলার ৬৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫৯টি ইউপিতে নৌকা প্রার্থীকে জয়ী করার পিছনে ৯৫ভাগ অবদান যার তার নাম কাজী আলমগীর। শুধু ইউপি চেয়ারম্যানই নয়। বড় বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে পৌরসভার মেয়র, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানও নির্বাচিত করেছেন তিনি। এরকম প্রায় আট শতাধিক ভোটারগণ অধির আগ্রহে আছেন তাদের সেই প্রতিদানের উপহার দেয়ার অপেক্ষায়। অনেক জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন ফরম আনুষ্ঠানিকভাবে জমা দিয়েছেন পটুয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলমগীর হোসেন।

বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রিয় কার্যালয়ের নির্বাচন বোর্ডে কাজী আলমগীর দলীয় ফরম জমা দেন। জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষনার পরপরই পটুয়াখালীতে বেশ জোরালো আলোচনায় উঠে আসে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির নাম। কিন্তু কেউ নিশ্চিত ছিলনা যে তিনি আদৌ মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করবেন কি করবেননা। কারণ আগামী এক বছর পরই জাতীয় সংসদ নির্বাচন। জেলা আওয়ামীলীগের অনেক সিনিয়র নেতৃবৃন্দরাই মনে করেছিলেন যে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ থেকে বিরত থাকতে পারেন।

এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে গোটা জেলায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়েছিল। অবশেষে বুধবার সেই বিষয়টি সকলের কাছে পরিস্কার হলো। সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র এবং জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ জেলা ও পৌর আওয়ামীলীগের একঝাক সিনিয়র নেতৃবৃন্দদের সাথে নিয়ে উৎসব মূখর পরিবেশে মনোনয়ন ফরম জমা দেন কাজী আলমগীর। মূলত দুপুরের পর থেকেই গোটা জেলায় আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিনত হয়েছে এ বিষয়টি। ধারনা করা হচ্ছে মোটামোটি নিশ্চিত হয়েই সাংগঠনিকভাবে সিদ্বান্ত নিয়েই কাজী আলমগীর দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন-এমন মন্তব্যও করেছেন অনেকে।

গলাচিপা উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহিন শাহ জানান, আমার দৃষ্টিতে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হিসাবে কাজী আলমগীর সফল। কারণ জেলা শহর থেকে একদম তৃনমূল অর্থাৎ রুট লেবেল পর্যন্ত তার পদচারনা রয়েছে। বিগত ইউপি নির্বাচনে সে যে পরিমান পরিশ্রম করে নৌকার প্রার্থীদেরকে জয়ী করেছেন আমার মনে হয় পটুয়াখালীতে গত ত্রিশ চল্লিশ বছরেও কোন সভাপতি এরকম কষ্ট করেনি। তাই আমরা সবাই মিলে কাজী চাচাকে নিয়ে দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছি। আমি আশা করি, নির্বাচন বোর্ড এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের বিমুগ করবেনা। জেলা আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ গাজী হাফিজুর রহমান সবির জানান, বিগত কয়েকটি ধাপে জেলার ৬৮ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ৫৯টি ইউপিতে নৌকা মার্কার প্রার্থী বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছে।

এই জয়ের পিছনে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির অবদান তুলনাবিহীন। আমার দৃঢ় বিশ^াস এই ৫৯জন ইউপি চেয়ারম্যান এবং আমাদের দলীয় জয়ী মেম্বারগনসহ পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলরগনরা সঠিক মূল্যয়ন করে জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতিকে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবে। কুয়াকাটা পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল বারেক মোল্লা জানান, আজ আমরা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতিকে নিয়ে দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছি। আশা করি দল তাকে মূল্যয়ন করবে। কারণ কলাপাড়া উপজেলার প্রতিটি নৌকার প্রার্থীসহ বিজয়ী ইউপি সদস্যগনরা তাকে ভোট দিয়ে জয়ী করার জন্য অধির আগ্রহে বসে আছে।

মনোনয়ন ফরম জমা দেয়ার সময় জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির সাথে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনের সংসদ সদস্য এস এম শাহজাদা, জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ভিপি আব্দুল মান্নান, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট উজ্জ্বল বসু, কোষাধ্যক্ষ গাজী হাফিজুর রহমান সবির, গলাচিপা উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহিন শাহ, দশমিনা সদর চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান লিটন, কুয়াকাটা পৌরসভা মেয়র মোঃ আনোয়ার হোসেন, পটুয়াখালী চেম্বারের সভাপতি মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন।

এছাড়াও জেলা আওয়ামীলীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক খাইরুল ইসলাম খায়ের, ক্রীড়া সম্পাদক সাইফুল ইসলাম কচি, উপ-প্রচার সম্পাদক জিএম জাফর কিরণ, জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মিজানুর রহমান মিজান, সদস্য এ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ওবায়দুল, সদস্য মিজানুর রহমান মনির খান, সদস্য মোঃ জুবাইদুল হক রাসেল, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ শাহজালাল, পৌর আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার জামাল হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন, জেলা শ্রমিক লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি খলিলুর রহমান, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মোঃ ইব্রাহিম এবং কুয়াকাটা পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল বারেক মোল্লা।

Categories
সারাদেশ

কুয়াকাটা ক্লাবের বিরুদ্ধে জমি দখল করে স্থাপণা নির্মাণের অভিযোগ

গোফরান পলাশ, কলাপাড়া:
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আদেশ অমান্য করে ভূমি দস্যুতায় লিপ্ত হয়েছে কুয়াকাটা ক্লাব। অন্যের জমি দখল করে পাকা স্থাপণা নির্মাণ করা হচ্ছে। কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করা হয়।

লিখিত সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কুয়াকাটা ক্লাব কর্তৃপক্ষ কাগজপত্র পর্যালোচনা ছাড়াই ৪ একর ১৭ শতক জমি বারবার মামলায় হেরে যাওয়া একটি পক্ষের নিকট থেকে বায়না চুক্তি করে পাকা স্থাপণা নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। কুয়াকাটায় জমি ক্রয়-বিক্রয়ে অনুমোদন নেয়ার নিয়ম থাকায় মামলার তথ্য গোপন করে জেলা প্রশাসন ও বিভাগীয় কমিশনারের অনুমোদনও পেয়েছেন তারা। এখন যেকোন মুহূর্তে দলিল রেজিস্ট্রি করে নিবেন, এমন শঙ্কার কথাও উল্লেখ করেছেন জমির মালিকানা দাবিদারদের একজন গাজী আব্বাস উদ্দিন আহম্মেদ (বাচ্চু)।
তিনি সংবাদ সম্মেলনের লিখিত অভিযোগে বলেন, কুয়াকাটা ক্লাব’র মত একটি সামাজিক সংগঠন এমন অস্বচ্ছতার আশ্রয় নিয়ে দখল নৈরাজ্য করলে তা আইনগতভাবে মোকাবেলা করা হবে।

কুয়াকাটা ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ওয়াহিদুজ্জামান সোহেল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যথাযথভাবে পর্যালোচনা করেই প্রকৃত জমির মালিকদের নিকট থেকে রেজিস্ট্রি বায়না চুক্তি সম্পাদন করে আমরা ভোগদখলে রয়েছি।

অন্যদিকে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়েছে, পর্যটন নগরী কুয়াকাটা পৌর সভার ৮ নং ওয়ার্ডে এস এ ২০৮ নং খতিয়ানের মালিক রাখাইন সম্প্রদায় ইয়োছেনা মগনী ও লাথয়ে মগ হইতে ১৩ একর ৫৪ শতক জমির পত্তন মুলে মালিক ছিলেন মরহুম আঃ করিম হাওলাদার। তার মালিকানা স্বত্ব বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক দেওয়ানী ১২৩/৭৫ নং মোকাদ্দমায় রায় ডিগ্রি বলে স্বীকৃত। উক্ত জমি বে-আইনীভাবে পেশী শক্তির জোরে স্থানীয় মোঃ আইউব আলী সিকদার এবং আঃ মন্নান হাওলাদার গংরা জমির প্রকৃত মালিক আঃ করিম হাওলাদারের মুত্যুতে ডিক্রি বাতিলের অপচেস্টায় দেওয়ানী ৮৬/১৯৭৬ এবং ২৯৮/১৯৭৮ নং মোকাদ্দমা করে ব্যর্থ হন।

পরবর্তীতে দেওয়ানী ১১/২০০৩ মোকাদ্দমা করে মোঃ আইউব আলী সিকদার আপিল করেন। যা দ্বিপাক্ষিকভাবে আঃ করিম হাওলাদারের অনুকূলে মোঃ আইউব আলী সিকদার গংদের আপিল খারিজ হয়। উক্ত জমি আঃ করিম হাওলাদারের ওয়ারিশগনের নামে নামজারী ও খাজনা দাখিলা সম্পন্ন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে গাজী আব্বাস উদ্দিন দাবী করেন, নগদ টাকার প্রয়োজনে মরহুম করিম হাওলাদারের ওয়ারিশগন কলাপাড়া এস আর অফিসের ২৬/০৫/২০১১ তারিখের রেজিস্টিকৃত ৪৩৫২ ও ৪৩৫৩ এবং ৭/৬/২০১১ তারিখে রেজিস্টিকৃত ৪৫৫৩/১১ নং বায়না দলিল মুলে ৮ একর ৬৪ শতক জমি বায়নাসহ আমাদের কতিপয় ব্যক্তির নামে হস্তান্তর করেন। এবং ২৬/৫/১১ ইং তারিখে কলাপাড়া এসআর অফিসে রেজিস্টিকৃত ১৩৪৮ ও ১৩৫০ নং আমমোক্তারনামা দলিলমূলে তফসিলভূক্ত সম্পত্তি রক্ষনা বেক্ষণ, মামলা পরিচানা এবং ক্রয় বিক্রয়ের জন্য মোঃ আবুল কালাম ও আমি গাজী মোঃ আব্বাস উদ্দিনকে ওয়ারিশগন কর্তৃক আমমোক্তার নিযুক্ত করেন।

তিনি লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, আইউব আলী সিকদার ও আঃ মান্নান হাওলাদার গংরা নিন্ম আদালত ও উচ্চ আদালতে মালিকানা দাবী স্বত্ব না করতে পেরে কুয়াকাটা ক্লাবের কাছে বিক্রি করে। এবং কলেজ নির্মাণের জন্য জমি মৌখিকভাবে দান করে। উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সেখানে গোপনে জমির আকার আকৃতি পরিবর্তন করেছে। যা সম্পুর্ন বে-আইনী। তিনি আরও দাবী করেন জরিপকারী কর্মকর্তাগন কাগজপত্র পর্যালোচনা না করে বিশেষ সুবিধা গ্রহনের মাধ্যমে আইউব আলী গংদের নামে বিএস জরিপ করে দেয়।

মালিকানা স্বত্ব না থাকলেও শুধুমাত্র ভূলবশত বিএস জরিপের বলে বিরোধীয় জমি তরিঘড়ি করে বিক্রি এবং দানপত্র দলিল করে দিয়ে নিজের দাতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। উচ্চ আদালতের রায় ডিগ্রি বলে বর্তমানে বিএস জরিপ সংশোধনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে দাবী করেন, আইউব আলী সিকদার ও আঃ মান্নান গংরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় পেশি শক্তির বলে জোরপুর্বক দখল করে ভোগদখল করছে। এসব ভূমি দস্যুদের কাছ থেকে দখলমুক্ত করে প্রকৃত মালিকদের মালিকানা স্বত্বে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

Categories
সারাদেশ

পটুয়াখালীতে মামলা করে বিপদে গৃহবধু

পটুয়াখালী প্রতিনিধি॥
পটুয়াখালীতে স্বামী-সন্তানের উপর হামলার ঘটনায় আদালতে মামলা করে বিপাকে পরেছে এক গৃহবধু। মামলার জেরে অভিযুক্তরা নানাভাবে বাদিকে অশ্লীল ভাষায় হুমকী-ধামকী দিয়ে নিজ বসত ভিটা ছারতে প্রভাবিত করছেন বলে অভিযোগ ওই গৃহবধুর। মঙ্গলবার পটুয়াখালী প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করে ভুক্তভোগী মোসাঃ রুনু আক্তার।

এঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে অসহযোগীতার অভিযোগ উঠেছে। তবে এসকল অভিযোগ অস্বীকার করে সদর থানার এসআই রতন কুমার হাওলাদার বলেন-মেডিকেল রিপোর্ট পেলে প্রতিবেদন দেব। হতাশ হওয়ার কিছু নেই।

সংবাদ সম্মেলনে গৃহবধু রুনু আক্তারে ছেলে ফেরদৌস লিখিত বক্তব্যে বলেন-গত ৩১ আগষ্ট পৈত্রিক সম্পত্তি বন্টনের কথা বলে তার বাবা মো. ফোরকান হাওলাদারেক ঘরে ডেকে নিয়ে যায় চাচা রফিক হাওলাদার। সেখানে বাকবিতন্ডা হলে হারুন হাওলাদার ও তার স্ত্রী শাহনাজ ও রফিক হাওলাদার ও তার স্ত্রী তামান্না তার বাবাকে মারধোর করে মারাত্মাক জখম করে।

হামলার ঘটনায় তার বাবা ফোরকান পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পরে মা রুনু আক্তার বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। মামলার পর থেকে অভিযুক্তরা বাদী ও স্বাক্ষীকে নানা ভাবে হয়ারনী হেনস্তা করছে বলে অভিযোগ করেন তারা। এর পূর্বে তার মা ও ফেরদৌসকে মারধোরের শিকার হয়েছে। অভিযুক্তরা তাদের পৈত্রিক সম্পত্তিকে থেকে বঞ্চিত করতে র্দীঘদিন থেকে নানা ভাবে হয়রানী করে আসছে।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে রফিক হাওলাদার বলেন ফোরকান আমাকে মারতে এসে নিজেই আহত হয়েছে। আমরা তাকে কিছু বলিনি।

Categories
সারাদেশ

পটুয়াখালীতে চাকুরিচ্যুত নাজিরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

পটুয়াখালী প্রতিনিধি॥
কোষাগারে জমার নামে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অব্যাহতি পাওয়া রাঙ্গাবালী ভূমি অফিসের নাজিরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোববার দুদকের সমন্বিত পটুয়াখালী জেলা কার্যালয়ের সাবেক সহকারী পরিচালক মো. আরিফ হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। অভিযুক্ত মো. রফিকুল ইসলাম পটুয়াখালী সদর উপজেলার ডিবুয়াপুরের মৃত তোজাম্বর আলী হাওলাদারের ছেলে। একই ঘটনায় গত ২৯ জুন মো. রফিকুল ইসলামকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় জেলা প্রশাসন।

দুদক মামলায় বলেন-কলাপাড়ায় চাকরিরত অবস্থায় আদালতের একটি মামলায় বরখাস্ত হয় মো. রফিকুল ইসলাম। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ৪ এপ্রিল বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে বদলি করে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন। তবে কি কারণে রফিকুল ইসলাম‘র বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছিল সে তথ্যও পাওয়া যায়নি। বরখাস্ত থাকাকালীন বাউফল উপজেলা ভূমি অফিসে জনবল সংকট থাকায় সংশ্লিষ্টরা রফিকুল ইসলামকে মৌখিকভাবে নাজিরের দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেন।

মৌখিক নির্দেশে নাজিরের দায়িত্ব পালন কালে ৫০টি ডি.সি.আর এর অনুকুলে আদায়কৃত অর্থ চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে ভুয়া চালান দেখিয়ে ৪০ লাখ ৯২ হাজার ১০৬ টাকা আত্মসাৎ করেন রফিকুল ইসলাম। তবে জেলা প্রশাসনের তদন্ত ও দুদকের মালায় আত্মসাৎকৃত অর্থের গড়মিল রয়েছে। এঘটনায় জেলা প্রশাসনের কয়েকদফা তদন্তে অভিযোগ প্রমানিত হলে গত ২৯ জুন রফিকুল ইসলামকে চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন।

Categories
সারাদেশ

কলাপাড়া প্রেসক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার মোঃ তৌহিদুর রহমান সিআইপি মিলনায়তন উদ্বোধন

গোফরান পলাশ(কলাপাড়া)
পটুয়াখালীর কলাপাড়া প্রেসক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার মো: তৌহিদুর রহমান (সিআইপি) মিলনায়তনের উদ্বোধন করা হয়েছে। দেশ বরেণ্য শিল্পপতি, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, দানবীর ইঞ্জিনিয়ার মোঃ তৌহিদুর রহমান (সিআইপি) আজ বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) অপরাহ্নে প্রধান অতিথি হিসেবে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ফিতা কেটে আধুনিক ডিজিটাল সুবিধা সম্পন্ন নান্দনিক এ হলরুমের শুভ উদ্বোধন করেন।

কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ও পটুয়াখালী ৪ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মোঃ মহিবুর রহমান।

অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ফ্রেশ গ্রুপ অফ কোম্পানিজ’র পরিচালক মোঃ মশিউর রহমান চমক (সিআইপি), ইকোনোমিক্স রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি সুলতান মাহমুদ, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এস এম রাকিবুল আহসান, কলাপাড়া পৌরসভার মেয়র বিপুলচন্দ্র হাওলাদার, কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র মোঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, কলাপাড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আবুল কালাম আজাদ প্রমূখ।

প্রেসক্লাবের সম্পাদক এস এম মোশারফ হোসেন মিন্টুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রশাসক ডা. চিন্ময় হাওলাদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব তালুকদার, কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী হুমায়ূন শিকদার, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি অধ্যক্ষ সৈয়দ নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি কলাপাড়া শাখার সম্পাদক কমরেড নাসির তালুকদার, কলাপাড়া চৌকি আদালত আইনজীবী কল্যাণ সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট শামীম আল সাইফুল সোহাগ, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মো. সাইদুর রহমান, কলাপাড়া বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মো. ফিরোজ শিকদার প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে উত্তরীয় ও বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এবং ক্লাবের সদস্যদের সাথে নৈশভোজে অংশগ্রহণ করেন অতিথিবৃন্দ। এরপর কেক কেটে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি করা হয়।

Categories
সারাদেশ

বঙ্গোপসাগরে ১৪ জেলে সহ দুটি মাছধরা ট্রলার ডুবি

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কবলে পরে ১৪ জন জেলেসহ এফবি সোহেল ও এফবি সুজন নামের দুটি মাছধরা ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আলীপুর-কুয়াকাটা মৎস্য আড়ৎ মালিক সমিতির সভাপতি আনসার উদ্দিন মোল্লা।

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার দিকে বঙ্গোপসাগরের মৌডুবির বয়া সংলগ্ন এলাকার সাগরে দুর্ঘটনা ঘটে। এসময় পাশ্ববর্তী অন্য একটি ট্রলার সকল জেলেদের জীবিত উদ্ধার করেন। উদ্ধারকৃত জেলে, ট্রলার মালিক মোঃ সোহল ও মোঃ সুজনের বাড়ি জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার মৌডুবী ইউনিয়নের নীচকাটা গ্রামে। জেলেরা বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে রয়েছেন এতে তাদের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

আলীপুর-কুয়াকাটা মৎস্য আড়ৎ মালিক সমিতির সভাপতি আনসার উদ্দিন মোল্লা বলেন, হঠাৎ ঝড়ের কবলে পরে ট্রলার দুটি ডুবে যায়। ওই ট্রলার দুটিতে ১৪ জন জেলে ছিলো। তাদেরকে অন্য জেলেরা উদ্ধার করেছেন তারা সুস্থ আছেন। ডুবে যাওয়া ওই ট্রলার মালিকদের প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ইতিমধ্যে অন্য জেলেরা ট্রলার দুটি উদ্ধার কাজ শুরু করেছে।
#

Categories
Uncategorized

কুয়াকাটায় ভ্রাম্যমান আদালতের হয়রানির অভিযোগ এনে খাবার হোটেল মালিকদের ধর্মঘট

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় ভ্রাম্যমান আদালতের হয়রানির অভিযোগ এনে ধর্মঘট করেছে খাবার হোটেল মালিকরা। বুধবার (১৭ আগষ্ট) সকাল থেকে সকল খাবার হোটেল বন্ধ রেখে অনির্দিষ্ট কালের জন্য তারা এ কর্মসূচি পালন শুরু করে। এতে ভোগান্তিতে পরেছে কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরা।

খাবার হোটেল-রেস্তোরা মালিক সমিতির সদস্যরা জানান ,গত দুই বছর করোনায় লকডাউনের কারনে তাদের হোটেল রেস্তোরা বন্ধ ছিলো। তবে হোটেল বন্ধ থাকলেও তাদের কর্মচারীদের বেতন গুনতে হয়। এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয় হোটেল মালিকরা। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারা আগের লোকসান পুষিয়ে উঠতে ধারদেনা করে ফের ব্যবসা শুরু করে। কিন্তু বর্তমান সময় মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমান আদালত হয়রানি করায় তারা অনেকটা নি:স্ব হয়ে পড়েছে।
তাই প্রশাসনের কাছ থেকে ভালো কোন ফলাফল না পাওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের
সকল হোটেল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

মুন্সিগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক মোঃ আবু মিয়া জানান, গতকাল রাতে কুয়াকাটায় এসেছি। খাবার-দাবার না বেশ বিপাকে পরেছি । সকল খাবার হোটেল বন্ধ। অনেক হাটাহাটি করেও কোন হোটেল খোলা পাইনি। পরে মোটরসাইকেলযোগে ৬০ টাকা ভাড়া দিয়ে
আলীপুর খাবার খেয়েছি।

মাদারীপুর থেকে আসা পর্যটক আমিনুল
ইসলাম জানান, পরিবারের সবাইকে নিয়ে কুয়াকাটায় এসেছি। সকল খবার
হোটেল বন্ধ থাকায় বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভ্যানযোগে মহিপুর গিয়ে সকালের নাস্তা করেছি।

বরিশাল থেকে আসা পর্যটক সোহাগ মাহামুদ বলেন, আমরা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ বন্ধ মিলে কুয়াকাটা এসেছি তিনদিন আগে আজকে চলে যাবো। খাবার রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় আমরা সকালের নাস্তা করতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন, মাঝেমধ্যে কুয়াকাটাতে ঘুড়তে আসা হয়। কিন্তু এর আগে যতবার আসছি খাবার রেস্তোরাঁয়, ফটোগ্রাফার, যাত্রীবাহী বাস ও বিচসহ বিভিন্ন জায়গায় হয়রানির শিকার হয়েছি। ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করার ফলে দুই মাসে এই হয়রানি অনেকটা কমে এসেছে ।

খাবার হোটেল-রেস্তোরা মালিক সমিতির সভাপতি মো. সেলিম মিয়া জানান, আমরা এখন অসহায় হয়ে পড়েছি। ধরেন সারা দিনে একজন হোটেল মালিক মাত্র ১০ হাজার টাকা বিক্রি করলো। কিন্তু নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এসে তুচ্ছ কারনে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করলো। এভাবে একের পর এক ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার ফলে আমরা এখন নি:স্ব। হোটেল বন্ধ রাখা ছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই। কারন আমরা জরিমানা গুনতে গুনতে ধারদেনায় জর্জরিত হয়ে পড়েছি। তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন সুরাহা না হলে আমাদের হোটেল অনির্দিষ্ট কারে জন্য বন্ধ থাকবে।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, মূলত কুয়াকাটায় পর্যটকরা এসে যাতে কোনভাবে প্রতারিত না হয়, সে কারনেই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়। আমাদের পক্ষ থেকে তাদের হোটেল খোলার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। তারপর তাদের যদি কোন কথা থাকে, সেটা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের কথা জানিয়েছি।

মঙ্গলবার (১৬ আগষ্ট) দুপুরে কুয়াকাটা পৌর শহরের চৌরাস্তা এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে পঁচা-বাসি খাবার বিক্রি ও সংরক্ষনের দায়ে ৪ রেস্টুরেন্ট মালিককে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রট ছেনমং রাখাইন।

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রট ছেনমং রাখাইন জানান, কুয়াকাটা ঘুরতে এসে কোন পর্যটক যাতে প্রতারিত না হয় সে বিষয়ে আমাদের নজরদারি রয়েছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Categories
Uncategorized

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের মালামাল ফেরত নিল প্রশাসন,২৯ পরিবারের বিলাপ

পটুয়াখালী প্রতিনিধি॥
ভূমি অফিসের লোকজনের হাতে-পায়ে ধরে কান্নাকাটি করেছি, তবুও তারা ঘরের মালামাল ফেরত নিয়ে গেছেন। মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী গরিবদের ঘর উপহার দিছেন। এসব ঘরে অনেকেই পরিবার নিয়ে বাস করছেন, তাহলে আমার কী অপরাধ? ঘর তৈরির মালামাল দিয়ে তারা আবার ফেরত নিচ্ছেন কেন? এ অন্যায়ের বিচার কে করবেন? ঘর তোলার জন্য ৩৫ হাজার টাকা সুদে এনে ডোবা ভরাট করে ভিটা বানাইছি। এখন তো টাকাও গেল, ঘরও গেল! কান্নাজড়িত কণ্ঠে এভাবেই বিলাপ করছিলেন পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের তাসলিমা বেগম।

তাসলিমার মতো আরও ২৯ পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের মালামাল পেয়েও হারিয়েছেন। মুজিব শতবর্ষে তৃতীয় পর্যায়ের প্রথম ধাপে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত ২৯৭ জনের নামের মধ্য ২৯ ব্যক্তির মালামাল ফেরত নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নতুন ঘর তোলার জন্য ইট, বালু খোয়া দেওয়া হলেও সম্প্রতি তা ফেরত নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে পরিবার গুলোর মাঝে আহাজারি চলছে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘরের তালিকায় নাম উঠাতে ধারদেনা করেছি। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ঘরের ভিটা বানাইছি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও ঘর তৈরির করে দেওয়ার পরিবর্তে মালামাল ফেরত নিয়ে যাচ্ছেন ইউএনওর লোকজন।

তৃতীয় পর্যায়ের প্রথম ধাপে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত ৫০ নাম্বার ক্রমিকে মো. তোফাজ্জেল প্যাদা, ৯৪ ক্রমিকে মোসা. মিনারা বেগম, ২২১ ক্রমিকে মোসা. তাসলিমা বেগম, ২৫৭ ক্রমিকে শাহ আলম, ১৮৪ ক্রমিকে মো. রেজাউল এবং ২৪৪ নাম্বার ক্রমিকে মোসা. কমেলা বেগমসহ ২৯ জনের মালামাল ফেরত নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীরা আরও বলেন, ইতোপূর্বে রাঙ্গাবালী উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর ঘর দেওয়া হয়েছে। ওইসব ঘরের সিংহভাগ জমিতে নীতিমালা মানা হয়নি। তাহলে শেষ পর্যায়ে নীতিমালার অজুহাতে আমাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা কেন টালবাহানা করছেন?

শাহ আলম প্যাদা বলেন, ডিসি, ইউএনও এবং মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ আছে বলেই রানাসহ কয়েক যুবক ঘরের মালামাল জোর করে নিয়ে গেছেন। এরপর থেকে আমি অসুস্থ। অন্যদের ঘর উঠছে। কী কারণে আমাদের ঘরের মালামাল নিয়ে গেছে, জানি না। এ বিষয়ে উপজেলা ভূমি অফিসের তহশিলদার মনিরুল ইসলাম বলেন, আমি শুধু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার হুকুম পালন করেছি।

রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাশফাকুর রহমান বলেন, সম্ভবত জমি নির্ধারণ সংক্রান্ত বিষয়ে ডিসির কাছে অভিযোগ ছিল, তাই জেলা প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি বলেন,এবার এককভাবে নয়, গুচ্ছ আকারে ঘর দেওয়া হবে। আগের গুলোতে অসঙ্গতি ছিল। এককভাবে ঘর দিলে জমি নষ্ট হয়, খাস এবং ব্যক্তি জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। এবার উঁচু স্থানে আশ্রয়ণ আকারে হবে। তাছাড়া ‘খ’ শ্রেণিতে ঘর দিতে গেলে আগে ‘ক’ শ্রেণি সম্পূর্ণ শূন্য ঘোষণা করতে হবে। আরও ৪৮ জন বাকি আছে, তাদের দিয়ে শূন্য ঘোষণা করা হবে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, ঘর নির্মাণে জমি পছন্দে আগে ত্রুটি ছিল। আগে বাড়িতে বাড়িতে এককভাবে হয়েছে। এবার গুচ্ছ আকারে হবে। সরেজমিনে যাচাই করে এর অসঙ্গতি পাওয়া গেছে। তাছাড়া ঘর বরাদ্দে যে নীতিমালা রয়েছে, তার আওতায় এগুলো পড়েনি, তাই মালামাল ফেরত নেওয়া হচ্ছে।

Categories
রাজনীতি সারাদেশ

সিরিজ বোমা হামলায় জড়িতদের বিচারের দাবীতে পটুয়াখালীতে বিক্ষোভ সমাবেশ

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে পটুয়াখালীতে বিক্ষোভ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। পটুয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মসূচীতে যুবলীগ.ছাত্রলীগ,স্বেচ্ছাসেবকলীগ,শ্রমিকলীগসহ আওয়ামীর সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। বুধবার বেলা ১১টায় জেলা শহরের পৌর নিউ মার্কেট চত্বর থেকে বিশাল আকারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন শেষে লঞ্চঘাট চত্বরে সমাবেশ মিলিত হয়।

সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে পটুয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলমগীর ও সাধারন সম্পাদক ভিপি আবদুল মান্নান বলেন-২০০৫ সালের ১৭ আগষ্ট দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা হামলা চালায় নিষিদ্ধ জঙ্গি ও জেএমবি সংগঠন। এঘটনায় দুই জন নিহত ও ১০৪ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এঘটনায় দায়েরকৃত ১৫৯টি মামলার প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছে তদন্তকর্মকর্তা। কিন্তু ঘটনার ১৭ বছর পূর্ণ হলেও অপরাধীদের বিচার নিশ্চিৎ করতে পারেনি সরকার।

কর্মসূচীতে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত বিচারের দাবি জানানো হয়। এতে প্রশাসন ব্যর্থ হলে আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে লাগামহীন কঠোর কর্মসূচির ঘোষনা দেয় তারা। অনান্যদের মধ্য বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি অ্যাড.সুলতান আহম্মেদ মৃধা, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট উজ্জ্বল বোস, কোষাধ্যক্ষ গাজী হাফিজুর রহমান সবির, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল ইসলাম খায়ের প্রমূখ।